অতৃপ্ত অশরীর ছায়া (পর্বঃ ০৫) | Dissatisfied Shadow Part-05

 

#পর্ব_০৫
.
টিভি অন করতেই যা দেখলাম তা দেখে তো পুরোই অবাক কেনো না টিভিতে খবর দেখাচ্ছে এই শহরের এসিপি কামরুল কে আজ মাঝ রাস্তায় খুন করা হয়েছে।
এবং খুব ভয়ানক ভাবে হত্যা করেছে যা দেখলে শরীরের লোম গুলো দাঁড়িয়ে যাবে।
.
কেনো না এসিপি কামরুল এর শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলা হয়েছে। শরীরের মধ্যে বিন্দু মাএ রক্ত এর চিহ্ন নেই।
কে করেছে এই খুন তা এখনো আজানাই রয়ে গেল।
.
আদও কী সে খুনি ধরা পড়বে নাকি সবার চোখে ফাকি দিয়ে আবারো নতুন কোনো মানুষের শরীরের রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে।তা এখনো জানা যায়নি।
আমি আপনাদের সাথে ছিলাম ঈশিতা নিউ ডেক্স মাধবপুর।
.
তাসফিয়াঃ দেখলে তো কিছু খন হলো কী না হলো এরি মধ্যে আরেকটা খুন করে ফেললো।
সাঈদঃ হুম সেটাই তো নীলাসার মৃত্যুর সাথে এসিপি কামরুল এর কী সম্পর্ক।
তাসফিয়াঃ আমিও সেটা বুঝতে পারছি না।
নিশ্চয়ই কোনো তো সম্পর্ক আছে না হলে কেনো মারবে তাকে।
.
সাঈদঃ হুম আমি একটু কাজ গুলো করে নি তুমি অন্য কিছু দেখো।
তাসফিয়াঃ হুম।
সাঈদঃ সারা দিন এ মোটামুটি কাজ গুলো শেষ করলাম ।
অনেক কাজ পড়ে ছিলো যে গুলো শেষ করতে প্রায় রাত নয়টা বেজে গেলো।
তাসফিয়াঃ কাজ শেষ হয়েছে তোমার।
সাঈদঃ হুম।
তাসফিয়াঃ আমার কিন্তু খুব ঘুম পেয়েছে চলো বাসায় যাই।
সাঈদঃ হুম তবে একটু রাতের খবর টা দেখে নি কেমন।
তাসফিয়াঃ অল্প কিন্তু।
সাঈদঃ হুম।
তার পর টিভি অন করতেই আবারো অবাক হলাম।
.
এই মুহুর্তে খবর পেলাম এই শহরে ডুকে পড়েছে কিছু রক্ত চুষা ভ্যামপেয়ার।
আর এসিপি কামরুল এর পোস্ট মেডাম রিপোর্টে ডাক্তার বলেছেন এসিপি কামরুল এর মৃত্যু ভ্যামপেয়ার এর কারণ হয়েছে।
.
(অনেকে হয়তো জানেন না ভ্যামপেয়ার এর অর্থ। ভ্যামপেয়ার এর অর্থ হলো, রক্ত চুষা বাদুর যাকে ইংরেজিতে ভ্যামপেয়ার বলে)
.
তাসফিয়াঃ টিভিতে এসব কি দেখাচ্ছে গো তাহলে এই খুন টা দিশা করে নি।
সাঈদঃ না,আচ্ছা তোমার কী মনে আছে কাল রাতে কেউ আমাদের পিছু পিছু আসছিলো।
তাসফিয়াঃ হুম কিন্তু সেটা তো দিশা ছিলো তাই না।
সাঈদঃ না সেটা দিশা নয় বরং ভ্যামপেয়ার গুলো ছিলো কেনো না মানুষ কখনো উড়তে পারে না। 😱
.
তাসফিয়াঃ সত্যি তো আচ্ছা তারা কেনো এসেছে এখানে তারা কী চায়? নাকি তাঁরাও প্রতিশোধ নিতে এসেছে।
সাঈদঃ আমি কিভাবে বলবো বলো? চলো বেশি রাত করেবাইরে থাকা ঠিক হবে না।
তাসফিয়াঃ হুম।
সাঈদঃ আজ সকালে অফিস থেকে নতুন একটা হোটেল আমাদের জন্য একটা রুম বুক করেছি কিছু দিন এর জন্য।এখন আমারা সেখানেই যাবো।
.
সাঈদঃ ড্রাইভার গাড়ি বেড় করো।
ড্রাইভারঃ স্যার গাড়ি বেড় করাই আছে আপনারা আসেন।
সাঈদঃ হুম ।
তার পর গাড়িতে উঠে বসলাম।
গাড়িটা কিছু দুর যেতেই।
ড্রাইভারঃ স্যার সামনে কিছু আছে আপনি দেখতে পাচ্ছেন।
.
সাঈদঃ হুম আরে এ গুলো তো ভ্যামপেয়ার এখান থেকে তারাতাড়ি চলো।
ড্রাইভারঃ স্যার চিন্তার কিছুই নেই আমরা যতখন গাড়িতে আছি ততক্ষণ ওরা কিছুই করতে পারবে না। কেনো না ওরা হয়তো জানে না এই গাড়িতে ডুকা এত সহজ না।
.
তাসফিয়াঃ আচ্ছা ঐ ভ্যামপেয়ার গুলো এখানে কী করছে।
সাঈদঃ হয়তো নতুন কেনো শিকার খুঁজে পেয়েছে।
কথা বলতে বলতে হোটেলে চলে আসলাম।
ভিতরে ডুকতেই দেখলাম পুরো হোটেল নিস্তব্ধ।
কোনো মানুষের নড়াচড়া শব্দ টুকুও নেই।
তাসফিয়াঃ আমরা এটা কোথায় আসলাম চারদিকে তো অন্ধকার।
সাঈদঃ তাই তো।
তখনি।
.
সবাই একসাথে বলে উঠলো
Happy Marriage day...
Happy marriage day mom dad .
তখনি চারপাশে আলো জ্বলে উঠলো।
.
সাঈদঃ দিশা তুমি এখানে।
দিশাঃ হুম বাবা তোমারা তো ভুলেই গিয়েছিলা আজ তোমাদের Marriage Anniversary.....
.
তাসফিয়াঃ হুম সত্যি তো আজ আমাদের বিয়ের ১৫ বছর পুর্ন হলো।
সাঈদঃ আমি তো পুরো সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম।
তাসফিয়াঃ আমিও।
দিশাঃ বাবা মা আজকের দিনটা তোমাদের জন্য খুব আনন্দের কিন্তু আমি এই দিনে তোমাদের সাথে থাকতে পারবো না।
.
সাঈদঃ কে বললো পারবে না তুই তো আমাদেরি মেয়ে কোথায় যাবিতুই।
দিশাঃ আজ যে আমবর্সা।
আজ অাত্মারা নতুন শক্তি পায় আজ আমিও পাবো কিন্তু সেটা ভয়ানক শক্তি।
.
.
ঠিক তখনি যা হলো তা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না।
দিশা যখন তাসফিয়ার কাছে যাচ্ছিলো তখন একদল ভ্যাম্পেয়ার সেখানে চলে আসে কিন্তু এই ভ্যাম্পেয়ার গুলোকে দেখে খুব ভয়নাক লাগছিলো কেনো না ওদের চোখ গুলো লাল রঙের বর্ণ ধারণ করেছে।
.
কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে সেই ভ্যাম্পেয়ার গুলো আমাদের দেখতে পেয়েও কেনো আক্রমণ করছে না চুপচাপ কেনো বসে রয়েছে।
.
দিশাঃ মা বাবা তোমারা ভিতরে যাও। না হলে ওরা তোমাদের উপর আক্রমণ করতে পারে।
তাসফিয়াঃ হুম ভিতরে চলো।
সাঈদঃ হুম ভিতরে যেতে যেতে যা দেখলাম তা দেখে আরো অবাক হলাম কেনো না দিশা ওই ভ্যাম্পেয়ার গুলোর সাথে উড়ে গেলো।
এটা কী করে সম্ভব।
.
মানুষ কীভাবে উড়তে পারে।
আমার মাথায় তো কিছুই আসছে না।
প্রথমতো দিশা বললো ওর সাথে কেউ শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করছে।
তার পর ওই ঘড়ি।
কিন্তু ওই অতৃপ্ত আত্মাটা তো কোনো মেয়ের তাহলে একটা মেয়ে কী করে আরেকটা মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারে?
.
তা থেকেও বড় আশ্চর্যের কথা দিশা উড়ছেই বা কী করে আর কী সম্পর্ক ওই রক্ত চুষা বাদুড়ের সাথে।
আমি যতই ভাবছি ততই রহস্য আরো গভীর হয়ে যাচ্ছে।
.
তাসফিয়াঃ কী হলো আবার তোমার? এভাবে থমকে গেলে যে..?
সাঈদঃ কিছু না।
তাসফিয়াঃ কিছু না বললেই হলো? তুমি সবসময় কিছু তো একটা ভাবো যেটা তোমাকে দেখলেই বুঝা যায়।
সাঈদঃ হুম কিন্তু সেটা তেমন কিছু না।
তাসফিয়াঃ বললেই হলো, আমার থেকে তোমাকে হয়তো ভালো মতো আর কেউ চিনে না, তুমিও না,বুঝলা?
সাঈদঃ হতে পারে।
তাসফিয়াঃ হতে পারে না এটাই সত্যি এখন ভিতরে আসো তো।
সাঈদঃ হুম চলো।
.
ভিতরে গিয়ে।
তাসফিয়াঃ আচ্ছা একটা বলবো।
সাঈদঃ হুম একটা কেনো হাজরটা বলো।
তাসফিয়াঃ আমার না......
সাঈদঃ কী আমার না...?
তাসফিয়াঃ মানে হলো আজ ঢিভিতে আমি একটা নেকলেস দেখেছিলাম আর ওইটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে আমাকে ওইটা কিনে দিবা।😇😇😇
.
সাঈদঃ ও এই বেপার। আচ্ছা ঠিক আছে কিনে দিবো।
তাসফিয়াঃ সত্যি উম্মাহহহহহ😘😘
সাঈদঃ হ্যা☺☺☺☺
দিশাঃ তোরা কেনো গিয়েছিলিস আমার বাবা মার সামনে।
বাদুর গুলোঃ আসলে আমরা বুঝতে পারি নি।
.
দিশাঃ কোনো পবিত্র শরীর পাই নি বলে তোদের বাদুর এর শরীরে আশ্রয় দিয়েছি।
কিন্তু কেউ যাতে জানতে না পারে তোরা অতৃপ্ত আত্মা।
দিশাঃ তোদের রাজা রিয়াদ কই।
বাদুর গুলোঃ রিয়াদ এখনি আসবে।
.
কিছুখন পর....
রিয়াদঃ নীলাসা আমি অনেক চেষ্টা করার পরেও দিশার শরীরের সাথে শারীরিক সম্পর্ক সম্পুর্ন করতে ব্যর্থ হয়েছি।
কিন্তু তুই কী করে এই শরীরের প্রবেশ করলি।
নীলাসাঃ কেনো না আমি ছলনাময়ী আত্মা যো কোনো শরীরে খুব সহজে প্রবেশ করতে পারি।
.
আর আমার কাজ শেষ হয়ে গেলে তুই এই শরীরটাকে নিজের বশ করতে সক্ষম হবি।
রিয়াদঃ কীভাবে।
নীলাসাঃ কেনো না ততদিনে এই শরীর আর পবিত্র থাকবে না, হয়ে যাবে অপবিত্র।
রিয়াদঃ হুম তবে সাবধানে থাকতে হবে সামনে পুর্ণিমার রাত।
.
এই রাতে আমারা আরো শক্তি শালী হয়ে উঠবো।
নীলাসাঃ হুম ততদিনে আমি আবারো কোনো নতুন গল্প বানিয়ে ফেলবো কোনো কিছুতেই এই শরীর ছাড়া যাবে না।
রিয়াদঃ হুম এখন আসি।
নীলাসাঃ হুম।
আসুন আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেই রিয়াদ আর নীলাসার সাথে।
.
রিয়াদ আর নীলাসা দুজন দুজনকে খুব ভালো বাসতো কিন্তু হঠাৎ করে তারা একদিন বাস এক্সিডেন্ট এ মারা যায় তার পর থেকে তাদের আত্মা গুলো এদিক সেদিক ঘুরতে লাগলো।
.
রিয়াদ তো দিশার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারে নি। তাই তার শরীর বশ করতে পারে নি কিন্তু বাকিদের ও তো শরীর লাগতো তাই তারা বাঁদুরে শরীরকে বশ করেছে।
.
নীলাসা আগে থেকে ছলনাময়ী মিথ্যা কথা বলে মানুষের মন জয় করে যা তারা সাঈদ আর তাসফিয়ার সাথে করেছে।
.
পরের দিন....
তাসফিয়াঃ এই ঘুম থেকে উঠো বলছি।
সাঈদঃ কী হয়েছে এত সকাল সকাল ডাকছো কেনো।
তাসফিয়াঃ বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।
সাঈদঃ তুমি কী পাগল হয়ে গেলে নাকি এখন তো শীতকাল চলে এসেছে বৃষ্টি কীভাবে হচ্ছে।
তাসফিয়াঃ আমি পাগল হয় নি সত্যি সত্যি বৃষ্টি হচ্ছে।
.
সাঈদঃ কোনো মতো ঘুম থেকে উঠে দেখলাম সত্যি তো খুব জোরে জোরে বৃষ্টি হচ্ছে।
বাইরে হালকা হালকা তুষার ও পড়ছে ঠান্ডাটা মনে হয় খুবে বেড়ে যাবে তাই না।
তাসফিয়াঃ হুম তাতে আমাদের কী আমাদের রুমে তো এসি ও রুম হিটার দুটাই আছে।
সাঈদঃ তুমি তো সব সময় নিজেরি চিন্তা করো কখনো ভেবে দেখেছো কী যাদের আমাদের মতো টাকা নেই ফুট পাতে থাকে থাকে তাদের কী অবস্থা হবে তারাও তো আমাদের মতো মানুষ ওদেরও তো জীবন বলে কিছু আছে।
.
ওদেরও তো কষ্ট হয়।
হে আল্লাহ তুমি তাদের কষ্ট কমিয়ে দাও তারা যে খুব অসহায়।
তাসফিয়াঃ তোমাকে এই জন্য আমার খুব ভালো লাগে তুমি সবসময় গরিব দুখি মানুষের কথা চিন্তা করো।
সাঈদঃ সেটা হয়তো জানি না তবে মানুষ হয়ে মানুষের কষ্টা হয়তো বুঝতে পারি।
.
ঠিক তখনি দেখলাম পাশে একটি......
.
আগামিকাল গল্পটা শেষ হবে।
.
.
#চলবে ---------------।
.
#লিখা_আবু_সাঈদ
.
.
#বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে সাথে থাকবেন। আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে মনে হয় গল্পটা আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা গল্পটা পড়েছেন,আর তাতে করে আমার ও পরবর্তী পর্বটা দেওয়ার আগ্রহ বেড়ে যায়।
আগের সকল পর্বঃ

 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url