অতৃপ্ত অশরীর ছায়া (পর্বঃ ০২) | Dissatisfied Shadow Part-02
#অতৃপ্ত_অশরীর_ছায়া
#পর্ব_০২
.
আজ কী হয় সেটা আমাকে দেখতে হবে, এভাবে রাত ১২ঃ২৯ আজ মনে হয় কিছুই হবে না কিন্তু যখনি ১২ঃ৩০ বাজলো তখনি ঘড়িটা আগের মতো জোরে জোরে বাজতে লাগলো এটা কী করে সম্ভব আমি তো ঘড়ির কাঁটা ও ব্যাটারি খুলে পুড়ে দিচ্ছিলাম তা হলে এটা কী করে সম্ভব।
.
ভয়ে বুকটা ধড়ফড় করছে কী হতে চলেছে একমাত্র উপর ওয়ালা ই জানে চারপাশে অন্ধকার।
এই সময় বিদ্যুৎ টাও চলে গেছে তখনি কারো ভয়ানক হাসির শব্দ ভেসে আসছে।
তোকে বলেছিলাম আমার পথে বাধা হয়ে দাড়াস না তবুও দাড়ালি আজ দেখ তোর কী অবস্থা করি।
তখনি আবার হাসতে হাসতে বল্লো,
.
এই অন্যায় এর শাস্তি হলো মৃত্যু, হ্যা তোকে মরতেই হবে।
সাঈদঃ কে আপনি এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে ভয় না দেখিয়ে সামনে আসেন দেখি কত বড় সাহস তখনি তাসফিয়া ঘুম থেকে উঠে গেলো।
তাসফিয়াঃ এই কী হয়েছে তোমরা এত রাতে চিৎকার করছো কোনো।
সাঈদঃ কিছু না এমনি।
তাসফিয়াঃ কিছু না বললে হবে, সকাল থেকে দেখছি তুমি কেমন আজব আজব ব্যবহার করছো কী হয়েছে তোমার? আমাকে বলো আমি তো তোমার বউ।
.
সাঈদঃ বললাম নাতো কিছু হয় নাই।
তাসফিয়াঃ আমার বিশ্বাস হয় না। কারণ আমি তোমার সবসময় পাশে থাকি।
আমার থেকে ভালো হয়তো তোমাকে এই দুনিয়াই কেউ চিনে না। তুমি আমাকে বলো কি হয়েছে?
.
সাঈদঃ ধুর এই মেয়েটার জেদ এর সামনে আর পারা গেলো না রাগ করলে আবার কাদতে শুরু করবে তাই ইচ্ছে না থাকা সত্যেও সব কিছু বলে দিলাম।
.
তাসফিয়াঃ এত সব হয়ে গেলো আর তুমি আমাকে কিছুই বলো নি কেনো?
.
সাঈদঃ এমনি তুমি টেনশন করবে তাই বলিনাই।
.
তাসফিয়াঃ হয়েছে এবার মিথ্যা কথা বন্ধ করে ঘুমাও কাল সকালে দেখা যাবে কী হয়।
সাঈদঃ তার পর কী ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল বেলা নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে।
শহরের বাইরে একজন তান্ত্রিক রয়েছেন ওনার কাছে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম।
অনেকক্ষন গাড়ি চালিয়ে তার পর ওনার দেখা পেলাম।
.
তান্ত্রিকঃ হঠাৎ আমার কাছে।
সাঈদঃ তার পর তান্ত্রিকের কাছে সব কিছু খুলে বললাম।
তান্ত্রিকঃ হুম বুঝলাম। এটা নিশ্চই কেনো অতৃপ্ত আত্মা।
কেনো শরীর বশ করতে চাচ্ছে তাই যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদের বলা হয় অতৃপ্ত অশরীর ছায়া।
সাঈদঃ তাহলে এই অতৃপ্ত অশরীর হাত থেকে কীভাবে রক্ষা পাবো।
.
তান্ত্রিকঃ আমাকে তোর বাসায় নিয়ে চল বাকি কথা সেখানেই হবে।
তার পর তান্ত্রিকে বাসায় নিয়ে আসলাম কিন্তু ওনি বাসার ভিতরে গেলেন না।
বাসার গেট থেকে বলে দিলেন।
এই বাড়িটা অভিশপ্ত বাড়ি। এই বাড়িতে আজ থেকে ৫০ বছর আগে একটা অতৃপ্ত অশরীর আত্মাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো একটি ঘড়ির মাঝে। কিন্তু এখন এই অশরীরি যে মুক্ত।
.
সাঈদঃ তান্ত্রিক এর কথাটা শুনা মাত্রই আমার মনে পড়লো, আমরা যখন এই বাড়িতে আসি তখন ঘড়িটা বন্ধ ছিলো। আর আমিই সেটাকে আবার ব্যাটারি লাগিয়ে চালু করি তার মানে আমিই ওই আত্মাকে মুক্ত করেছি।
তান্ত্রিকঃ কী ভাবছিস কী করে মুক্তি পেলো এই অশরীরী ছায়া শোন তাহলে এই বাড়িতে যদি কখনো কোনো পবিত্র মানুষের আগমন হয় তাহলে সে মুক্তি পাবে সেই আত্মা; আর এই বাড়িতে তোর মেয়ে একমাত্র পবিত্র শরীর।
তাই তোর মেয়ের শরীরকে বশ করার জন্য শারীরিক সম্পর্ক করতে চায় কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয় কেনো না অশুভ শক্তি কখনো শুভ শক্তি বা পবিত্র শরীরকে বশ করতে পারে না আর তুই সেদিন জেগে ছিলি বলে ওই আত্মাটা শারীরিক সম্পর্ক করতে পারেনি তাই তোর জীবন নিতে চাইবে।
সাঈদঃ তাহলে এর হাত থেকে বাঁচার উপায় আমাকে বলুন প্লিজ।
.
তান্ত্রিকঃ এর হাত থেকে বাচার কোনো উপায় নেই। তোরা যেখানে যাবি সেখানে পিছু পিছু যাবে এই অশরীরী ছায়া।
তোরা এই বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে যা।
কেনোনা এই বাড়িটা অভিশপ্ত।
সাঈদঃ আমার যে এখন ভয় লাগছে এই বাড়ির ভিতরে যেতে।
.
তান্ত্রিকঃ ভয় নেই মাগরিব এর আগ পযন্ত ওই আত্মা কিছুই করতে পারবে না।
সাঈদঃ আচ্ছা তাহলে আমি এখনি সব নিয়ে নতুন কোনো খানে চলে যাচ্ছি।
তান্ত্রিকঃ হুম এটাই ভালো আমি চললাম কাল দেখা হবে।
সাঈদঃ আচ্ছা। চলুন আপনাকে রেখে আসি।
.
তান্ত্রিকঃ থাক বাবা লাগবে না, তুমি কথাটা বলেছো আমি এতেই খুশি।
সাঈদঃ তার পর তান্ত্রিক চলে গেলো।
আমি ভিতরে গিয়ে তাসফিয়া আর দিশা কে সব কিছু খুলে বললাম।
তাসফিয়া তো কথা গুলো শুনে আমার হাতটা যে ধরলো আর ছাড়লোই না ওর বলে ভয় লাগছে।।
.
সব কিছু নিয়ে এই বাসাটা ছেড়ে নতুন একটা বাসায় আসলাম কিন্তু ওই অশরীরী কী এখানেও আসবে?
.
গল্প পড়ে কেউ কেটে পরবেন না,
সবার কাছে অনুরোধ! সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন।গল্পে আপনাদের আশানুরূপ লাইক পেলেও তেমন কোনো মন্তব্য পাইনা।গঠনমূলক কিছু মন্তব্য করে আপনারা আমাকে উৎসাহ দিতে পারেন বা গল্প সম্পর্কে আপনাদের অনুভুতি প্রকাশ করতে পারেন।এতে আমার ও ভালো লাগে।তাই শুধু লাইক না করে গঠনমূলক কিছু মন্তব্য ও করবেন আশা করছি।
ধন্যবাদ গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য দুঃক্ষিত।
.
তান্ত্রিকের কথা মতো তো নতুন বাসায় চলে আসলাম, কিন্তু এখনতো দেখি এখানেও পিছু পিছু এসেছে সেই অশরীরী ছায়া গুলো। নতুন বাসায় এসে এমন ভয়ানক ঘটনা ঘটে যাবে যেটা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না।
.
আজ রাতে কী হবে সেটা নিয়ে অনেক ক্ষণ ভাবলাম কিন্তু কিছু বুঝতে পারছি না।
ধুর যা হবার তা তো হবেই এটা আটকানোর সাধ্য কারো নাই। তাই অত ভেবে লাভ নাই।
তার পর তিনজনে মিলে শুয়ে পড়লাম একি বিছানায়।
.
আমি আজও মাঝে একপাশে তাসফিয়া আরেক পাশে দিশা দুজনে তো এমন ভাবে জরিয়ে ধরে আছে মনে হয় কেউ আমায় দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছে।
আমাদের কারো চোখে ঘুম নেই।
১১ টার সময় দিশা তো ঘুমিয়ে পড়েছিলো কিন্তু আমি আর তাসফিয়া ঘুমাই নি।
সাঈদঃ ধুর ঘুমও ধরছে না কী যে করি তখনি মনে আসলো এভাবে বিছানায় না ঘুমিয়ে আমাদের বাসা থেকে একটু দুরে একটা সমুদ্র সৈকত রয়েছে।
সাঈদঃ তাসফিয়া শুনছো।
তাসফিয়াঃ হুম বলো।
সাঈদঃ একটু উঠবা।
তাসফিয়াঃ এত রাতে, কেনো?
সাঈদঃ আরে উঠোই না তার পর বলছি।
.
তাসফিয়াঃ তার পর বিছানা থেকে উঠে। হুম বলো এইবার।
সাঈদঃ চলো বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
তাসফিয়াঃ এত রাতে বাইরে কেনো ।
সাঈদঃ অনেক দিন হলো কোথাও যাওয়া হয় নি চলো না ঘুরে আসি।
তাসফিয়াঃ এত করে যেহেতু বলছো তাহলে চলো।
সাঈদঃ তার পর আমি আর তাসফিয়া বাইরে বেরিয়ে পড়লাম।
আজ শহরটা নিস্তব্ধ। মনে হয় এই শহরে আমরা দুজনে কিছু ক্ষন হাটার পর সমুদ্র সৈকত এ চলে আসলাম তার পরে দুইজনে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে লাগলাম।
ইসস কত দিন হলো এই ভাবে সমুদ্রের পাড়ে হাটিনি।
দুজনে সারা রাত সমুদ্রের পাড়ে বসে অনেক গল্প করলাম সমুদ্রের পাড়ে বসে চাদটা দেখতে দেখতে সকাল হয়ে গেলো।
তার পর সকাল বেলা কুয়াশায় ভেজা ঘাস গুলোর উপর হাটতে ভালোই লাগছিলো।
ইসস এই মুহুর্ত টা যদি আবারো ফিরে আসতো।
.
তার পর বাসায় ফিরে এলাম।
কেনো না দিশা বাসায় একা আছে।
বাসায় এসে দেখলাম দিশা এখনো ঘুমাচ্ছে তাই আর তাকে ডাক দেয় নি।
সকালে হালকা নাস্তা করে অফিসে চলে আসলাম তার পর মন দিয়ে সব কাজ করে বাসায় ফিরলাম।
বাসায় আসা মাত্রই তাসফিয়া বললো।
.
তাসফিয়াঃ তুমি এতক্ষন কোথায় ছিলে। দেখো না দিশা কেমন করছে।
সাঈদঃ কেমন করছে মানে কী।
তাসফিয়াঃ তুমি যখন সকালে নাস্তা করে অফিসে গেলে আমি তখন দিশাকে ডাকলাম। তারপর থেকে ও কেমন যেন করছে।
.
সাঈদঃ তাহলে কি তান্ত্রিক কে ডাকবো।
তাসফিয়াঃ হুম তাই করো চলো। তাড়াতাড়ি ওনার কাছে যাই।
সাঈদঃ তার পর গাড়ি বের করে তান্ত্রিকের কাছে গেলাম।
তান্ত্রিকঃ এত রাতে আমার কাছে কেনো।
সাঈদঃ তার পর তান্ত্রিককে সব কিছু খুলে বললাম।
তান্ত্রিকঃ হুম বুঝসি। তোর মেয়ের শরীরটা পুরোটাই এখন ওই অতৃপ্ত অশরীর কবলে চলে গেছে তারা তোর মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে সক্ষম হয়েছে।
.
সে এখন ধীরে ধীরে অশুভ শক্তিতে পরিণত হবে।
সাঈদঃ এটা কী করে সম্ভব আপনি দয়া করে কিছু করুণ প্লিজ।
তান্ত্রিকঃ এর থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই উপায়।
সাঈদঃ কী সেটা।
তান্ত্রিকঃ আজ থেকে ঠিক ১৯ দিন পর পূর্ণিমার রাত ওই রাতে সকল আত্মা গুলো তাদের বশ করা শরীর গুলো ছেড়ে নতুন শরীরের খোজে। যখন কোনো শরীর খুঁজে পায় না তখন আবার পুরাতন শরীরে ফিরে আসে।
তাসফিয়াঃ তাহলে কী ওই রাতে আমার মেয়ে মুক্তি পাবে ওই অশরীরীদের হাত থেকে।
.
তান্ত্রিকঃ সেটা সঠিক ভাবে বলা যাবে না তবে যদি ওই রাতে শুভ কোনো আত্মা তোমার মেয়ের শরীরে প্রবেশ করা যায় তাহলে আর কোনো আত্মা বশ করতে পারবে না।
সাঈদঃ সেটা কী করে সম্ভব।
তান্ত্রিকঃ সব কিছু আমিই করবো এখন বাসায় ফিরে যাও তবে সাবধান তোমার মেয়ের আশে পাশে যেনো কেউ না যায়।
.
যদি কেউ যায় তাহলে তার শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে।
সাঈদঃ হুম।
তার পর গাড়ি নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম,হঠাৎ বাসার সামনে এসে রাস্তায় অনেক ভিড় দেখতে পেয়ে,তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নিচে নেমে যা দেখলাম.....
চলবে ------------------------।