অতৃপ্ত অশরীর ছায়া (পর্বঃ ০৩) | Dissatisfied Shadow (Part-03)

 

    
#অতৃপ্ত_অশরীর_ছায়া
#পর্ব_০৩
.
যদি কেউ যায় তাহলে তার শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে।
সাঈদঃ হুম।
তার পর গাড়ি নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম,হঠাৎ বাসার সামনে এসে রাস্তায় অনেক ভিড় দেখতে পেয়ে,তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নিচে নেমে যা দেখলাম তাতে চোখ কপালে উটার মত অবস্থা। সেখানে একটা মেয়ের লাশ পড়ে রয়েছে।
.
ওই স্পটে লোকজন বলাবলি করতেছে এই মেয়েটার শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলছে। কিন্তু কে খেয়েছে বা সেটা কে করছে কেউ জানে না।
মেয়েটির ঘাড়ে কামড়ানোর দাগ গুলো ভালোভাবেই বুঝা যাচ্ছে।
তাসফিয়াঃ এটা আবার দিশার কাজ না তো কেনো সে সকাল বেলা আমার হাতে ঠিক একি ভাবে কামড় বসিয়ে ছিলো।
সাঈদঃ এটা কী করে হতে পারে, ওকে তো রুমে বন্ধ করে রেখে এসেছি।
তখনি আরেকজন লোক চিৎকার করে বলতে লাগলো এই দিকে আরেকটা মেয়ের লাশ পড়ে রয়েছে।
.
মানুষ জন তাড়াতাড়ি সেখানে ছুটে গেলো সেখানে পুলিশও চলে এসেছে।
এই মেয়েটাকে ঠিক আগের মেয়েটার মতো মারা হয়েছে মানে শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলছে।
তাসফিয়াঃ আমার কিন্তু এবার খুব ভয় লাগছে।
সাঈদঃ আমি আছি তো ভয় পাচ্ছো কেনো?
তাসফিয়াঃ তাড়াতাড়ি বাড়ি চলো বাইরে থাকা ঠিক হবে না।
সাঈদঃ হুম ঠিক বলেছো চলো বাড়ি গিয়ে দেখা যাক।
.
তার পর সেখান থেকে প্রায় ১০ মিনিট পর বাসায় চলে আসলাম।
কিন্তু বাসায় আমারা যেভাবে দরজাটা লাগিয়ে ছিলাম ঠিক সে রকমি আছে।
দরজার তালাটা খুলে ভিতর ডুকলাম।
তাসফিয়াঃ উপরে চলো না গিয়ে দেখি দিশা ওর রুমে আছে কী না।
সাঈদঃ হুম চলো।
তার পর আস্তে আস্তে করে গিয়ে দিশার ঘরের দরজাটা খুলতেই দেখলাম দিশা তার রুমে ঘুমিয়ে আছে।
.
তাহলে এটা দিশার কাজ না।
কে করছে এমন নাকি সেই অশরীরী ছায়া গুলো নতুন শরীরে প্রবেশ করে এসব করছে।
তাসফিয়াঃ হুম তাই হতে পারে। কেনো না অতৃপ্ত আত্মা ছাড়া রক্ত কেউ চুষে খায় না।
সাঈদঃ আল্লাহ্ই জানে কী হতে চলেছে। একমাত্র তিনিই ভালো জানেন।
তাসফিয়াঃ হুম নিচে চলো।
সাঈদঃ হুম চলো।
তার পর নিচে এসে টিভিটা অন করতেই দেখলাম টিভিতে খবর হচ্ছে।
.
এই শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিছু ভয়ানক রক্তে খেকো প্রাণী যারা মানুষের শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলছে।
তাই রাতের বেলা কেউ একলা বাসা থেকে বের হবেন না। নতুন খবর পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
জানি না এই জীবনে বেচে থাকতে আরো কী কী দেখতে হবে।
যতই সময় যাচ্ছে রাত ততই গভীর হচ্ছে।
চোখে হাল্কা ঘুমের আলিশ এসেছিলো তখনি দিশার চিৎকার শুনতে পেলাম।
.
বাবা মা তোমার কই আর আমাকে এভাবে রুমের মধ্যে আটকে রেখেছো কেনো আমার ভয় করছে তো তোমার তারাতাড়ি এসো না।
সাঈদঃ নিজের মেয়ের এমন অবস্থা দেখে না যেয়ে পারলাম না তারাতাড়ি উপড়ে এসে দরজাটা খুলতেই যা দেখলাম তা দেখে আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।
.
.
আমি দরজাটা খোলা মাত্রই যা দেখলাম, তাতে মনে হইলো কিছুক্ষন এর জন্য আমার পায়ের নিচের মাটি মনে হয় সরে গেছিলো।
দিশা আস্ত একটা মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে।
চোখ দুটো পুরো লাল হয়ে গেছে।
এটা কী দেখছি আমি সত্যি নাকি মিথ্যা।
তাহলে আগের দুটো মানুষের রক্ত দিশাই চুষে খেয়েছে।
কিন্তু দিশা রুম থেকে বের হচ্ছে কীভাবে।
এসব ভাবতে ভাবতে মনে হলো কেউ যেনো এদিকে আসছে সামনে তাকাতেই দেখলাম দিশা আমার দিকেই আসছে।
.
দিশাঃ আমি আরো রক্ত চুষে খাবো আমার খুব খিদে পেয়েছে। রক্ত খাবো আজ যাকেই পাবো তারি রক্ত চুষে খাবো।
সাঈদঃ এই খানে থাকা মোটেও ঠিক হবেনা।
তার চেয়ে ভালো এখান থেকে পালিয়ে যাই।
সাথে সাথে দরজাটা বন্ধ করে। নিচে এসে তাসফিয়াকে ডাক দিলাম।
তাসফিয়াঃ এত রাতে ডাকছো কেনো।
.
সাঈদঃ তার পর তাসফিয়াকে সব কিছু খুলে বললাম।
তাসফিয়াঃ কী তাহলে আমার সন্দেহ টাই ঠিক।
সাঈদঃ হুম আর উপরে তো একটা লাশ ও পড়ে আছে।
চলো এখান থেকে পালিয়ে অন্য কোন খানে যাই।
কিছু দিন এর জন্য দিশার কাছ থেকে দুরে থাকতে হবে না হলে কখন যে আমাদেরি রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে তা আমরাই বলতে পারবো না।
.
তাসফিয়াঃ এত রাতে কোথায় যাবা।
সাঈদঃ কোথাও না গাড়িতে বসে দুজনে সারা রাত ঘুরে বেড়াবো।
তাসফিয়াঃ হুম তারাতাড়ি চলো।
সাঈদঃ তার পর দুজনে গাড়িতে বসলাম মানে আমার একটা নিজস্ব কার রয়েছে ওইটাতে।
তাসফিয়াঃ বাইরে ঠান্ডা করছে না।
সাঈদঃ হুম হালকা হালকা।
তাহলে এসি টা অন করে দেই।
তাসফিয়াঃ হুম দাও।
সাঈদঃ কিছু দুর যেতে না যেতেই মনে হচ্ছে কেউ আমাদের পিছু নিয়েছে কিন্তু কে সেটা।
.
তাসফিয়াঃ শুনছো ওই দেখো কী যেনো একটা উড়তে উড়তে আমাদের পিছনে আসতেছে।
সাঈদঃ হুম সেটা আর কেউ না দিশাই ভালো মতো দেখো আর ভালো মতো সিট বেল্টা লাগিয়ে নাও।
তার পর গাড়ি টা 280 গতিতে ছুটতে লাগলো।
তাসফিয়াঃ দিশা আমাদের পিছনে আসতেছে কেনো এতে ওর কী লাভ।
সাঈদঃ রক্ত চুষে খাবে বলে এই শহরটা দেখছো না কত নির্জন কেউ বাইরে নেই আমার দুজন ছাড়া।
.
তাসফিয়াঃ আমার কিন্তু খুব ভয় করছে।
সাঈদঃ কিছুটা আত্ম বিশ্বাস রাখো।
তখনি গাড়ির তেল শেষ।
ধুর শালার গাড়ির তেল শেষ হওয়ার আর জায়গা পেলো না।
এমন জায়গায় এসে দাড়ালো যেখানে না আছে বাড়ি না আছে আসে পাশে দোকান শহরের ঠিক মাঝে চারিপাশে বন জঙ্গল।
তাসফিয়াঃ কী হবে এখন আমার কিন্তু খুব ভয় লাগছে।
.
সাঈদঃ কী আর হবে সারারাত এখানে বসে কাটাতে হবে।
তাছাড়া গাড়ি থেকে বের হওয়া তো যাবেই না। এখানে অনেক বন্য প্রাণী আছে।
তাসফিয়াঃ তাহলে পিছনে চলো।
সাঈদঃ হুম।
পিছনে বসতেই।
তাসফিয়াঃ খুব ঠান্ডা করছে। গাড়ির এসিটাও বন্ধ হয়ে গেছে।
সাঈদঃ হুম আমার কাছে আসো। তোমাকে জরিয়ে ধরি তাহলে ঠান্ডা কম লাগবে।
তাসফিয়াঃ হুম।
.
সাঈদঃ তাসফিয়াকে জরিয়ে ধরে।
তাসফিয়াঃ আচ্ছা আমরা এখানে কী নিরাপদ।
সাঈদঃ হুম যতখন গাড়িতে আছি ততক্ষণ।
তাসফিয়াঃ তাই যদি কেউ কাচ ভেঙ্গে ভিতরে ডুকতে চায়।
সাঈদঃ পারবে না কেনোনা আমাদের গাড়ির কাচ গুলো চিনের কাচের ব্রিজ এর মতো শক্ত।
আর বাইরে থেকে তো ভিতরে কেউ দেখতেই পাবে না।
তাসফিয়াঃ তবুও কেনো যানি আমার খুব ভয় করছে।
.
সাঈদঃ মেয়েদের একটু ভয় করেই এটা স্বাভাবিক।
এসব কথা বলতেই গাড়ির সামনে দিশা এসে দাড়ালো সে আমাদের দেখতে পাবে না কিন্তু আমরা দেখতে পাবো।
দিশাঃ মা বাবা দরজাটা খোলো আমাকেও ভিতরে আসতে দাও।
আমার কাছ থেকে কেনো তোমারা দুরে চলে যাচ্ছো........
.
.
#বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
 
    
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url