অতৃপ্ত অশরীর ছায়া (পর্বঃ ০৪) | Dissatisfied Shadow Part-04
#পর্ব_০৪
.
সাঈদঃ তাসফিয়াকে জরিয়ে ধরে।
তাসফিয়াঃ আচ্ছা আমরা এখানে কী নিরাপদ।
সাঈদঃ হুম যতখন গাড়িতে আছি ততক্ষণ।
তাসফিয়াঃ তাই যদি কেউ কাচ ভেঙ্গে ভিতরে ডুকতে চায়।
সাঈদঃ পারবে না কেনোনা আমাদের গাড়ির কাচ গুলো চিনের কাচের ব্রিজ এর মতো শক্ত।
আর বাইরে থেকে তো ভিতরে কেউ দেখতেই পাবে না।
তাসফিয়াঃ তবুও কেনো যানি আমার খুব ভয় করছে।
.
সাঈদঃ মেয়েদের একটু ভয় করেই এটা স্বাভাবিক।
এসব কথা বলতেই গাড়ির সামনে দিশা এসে দাড়ালো সে আমাদের দেখতে পাবে না কিন্তু আমরা দেখতে পাবো।
দিশাঃ মা বাবা দরজাটা খোলো আমাকেও ভিতরে আসতে দাও।
আমার কাছ থেকে কেনো তোমারা দুরে চলে যাচ্ছো?
আমার অন্যায়টা কী?
আমি কী তোমাদের মেয়ে না?
সাঈদঃ হুম আমাদেরি মেয়ে কিন্তু।
দিশাঃ কিন্তু কী আমার মাঝে যে আছে তার কথা বলছো তো।
.
সাঈদঃ হুম।
দিশাঃ বাবা আমি ইচ্ছে করেই আমার শরীরের এই অশরীরকে আশ্রয় দিয়েছি।
কেনো না আমি ওদের সাহায্য করতে চাই।
তাসফিয়াঃ তুই চলে যা এখান থেকে।
তুই একটা রক্ত চুষে খাওয়া ভয়ানক আত্মা।
দিশাঃ মা তুমি শুধু আমার বাইরের দিকটাই দেখলে ভিতরে যারা রয়েছে তাদের কষ্ট টুকু বুঝলে না।
তাসফিয়াঃ কীসের কষ্ট হুম আর তুই তো এখন ওদের বশ এ।
দিশাঃ না মা আমি কারো বশে নই তোমারা আমাকে ভয় পাচ্ছো কেনো।
.
ও বুঝতে পারছি তোমারা ভাবছো আমি তোমাদের রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবো তাই না।
তাসফিয়াঃ হুম।
দিশাঃ মা বাবা তোমারা এটা ভাবতে পারলে যে আমি তোমাদের মেয়ে হয়ে তোমাদেরি রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবো।
আমি যাদের রক্ত চুষে খেয়েছি তারা সবাই নীলাসা কে খুন করেছিলো।
সাঈদঃ wait wait এর মাঝে নীলাসাটা আবার কে হুম?
দিশাঃ নীলাসা হচ্ছে সেই যাকে আমার শরীরের আশ্রয় দিয়েছি।
.
আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে।
.
নীলাসাঃ আমি গ্রামের সহজ সরল একটি মেয়ে।
বাবা মার কাছে রাজকন্যার মতো ছিলাম।
আমি তাদের কাছে ওদের পৃথিবী ছিলাম আর আমার কাছে ওরা।
আমি hsc পরিক্ষা দিয়ে বাসায় মা বাবার সাথে বসে খাবার খাচ্ছিলাম তখন শহর থেকে একটা সুন্দর হ্যান্ডস্যাম ছেলে আমাদের বাসায় আসে বাবার সাথে দেখা করতে।
আমার প্রথম দেখায় ভালো লেগেছিলো।
কিন্তু জানতাম না যে ছেলেটা আমাকে দেখে cruse খেয়েছে।
.
তার পর থেকে ছেলেটা আমার পিছনে ঘুর ঘুর করতে থাকে একদিন এসে আমাকে তো প্রপোজ ও করে ফেললো।
I Love You nilAsha..
বিশ্বাস করো আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
আমার যেহেতু তাকে ভালোই লাগতো তাই আর না করলাম না একসেপ্ট করে ফেললাম।
.
এর পর থেকে আমাদের মাঝে কথা হতে থাকে আমি খুব ভালোবেসে ফেলেছিলাম তাকে।
এতটাই ভালোবেসে ফেলেছিলাম যে তার জন্য সব কিছু করতে রাজি ছিলাম একদিন সে বললো রুম ডেট করতে আমি না করলাম।
কিন্তু ভালোবাসার দোহাই বলে সেদিন রুম ডেট করতে বাধ্য ছিলাম।
সে বলে আমাকে বিয়ে করবে তাই তার বাবাকে বলতে শহরে গেছিলো। ওই দিন আমি খুব কেঁদেছিলাম কেনো না তাকে এক সেকেন্ড যদি না দেখি তখন খুব খারাপ লাগতো।
সে দিন বৃষ্টি হচ্ছিলো বলে কেউ আমার কান্না দেখতে পায় নি।
.
এভাবে ১৪ দিন পর সে ফিরে আসে।
তার পর সে আমাকে বললো সুন্দর করে সেজে তার বাসায় যেতে।
আমিও তাই করলাম।
তার বাসায় গিয়ে দেখি কেউ নাই।
ও বলেছিল ওর বাবা আমাকে দেখবে তাই আসতে বলছে।
এর পর সে আমাকে কফি খেতে দিলো আমি কফিটা খেয়ে কেমন যানি ফিল করতে লাগলাম পরে জানতে পারি ওই কফিতে ঘুমরে ঔষধ মেশানো ছিলো।
যখন আমি ওই ঘুমের ওষুধ মেশানো কফিটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তখন তার বাবা সে তার ৫ জন বন্ধ মিলে আমাকে ধর্ষণ করে।
কিন্তু তাদের ধর্ষণ করার পরেও মনের ইচ্ছে পুরণ হয় নি তারা আমাকে শহরে নিয়ে এসে রোজ রাতে বাবা আর ছেলে মিলে ধর্ষণ করতো।
.
সারা দিন কিছুই খেতে দিতো না।
তারা মানুষের কাছে আমার শরীরকে বিক্রি করতো রোজ নতুন নতুন মানুষের কাছে।
এসব সহ্য করতে পারি নি আমি একদিন এক লোকের কাছে আমায় বিক্রি করলো ৫০০০০ হাজার টাকায়। ওই দিন ওই মানুষটি সারাদিন ধর্ষণ করেছিলো।
.
আমার শরীরের অবস্থা এমন হয়েছিলো যে ঠিক মতো চলতেই পারছিলাম না।
তাদের কথা না শুনলে খুব মারতো একদিন আমাকে ওরা খুব মারে।
প্যান্টের বেল দিয়ে। আমি মার খেতে খেতে অঙ্গান হয়ে গেছিলাম তবুও তারা মারা বন্ধ করে নি।
.
মার সহ্য না করতে পেরে সেখানেই মারা যাই।
পরে জানতে পারি তারা মেয়ে দের নিয়ে ব্যবসা করে।
এখন আপনারাই বলেন আমি কি নিবো না আমার মৃত্যুর প্রতিশোধ?
.
.
সাঈদঃ হুম। সেটা না হয় মানলাম কিন্তু এই নিরীহ মানুষদের রক্ত চুষে খাওয়া কী ঠিক।
দিশাঃ কারা নিরীহ মানুষ? যারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করে তারা? আমি যাদের রক্ত চুষে খেয়েছি তারা? সবাই খুনি তাদের কারণ এ আমাকে মরতে হয়েছে না হলে আমি আজো জীবিত অবস্থায়ই থাকতাম পৃথিবীতে।
.
সাঈদঃ হুম কিন্তু মেয়ে গুলো কী করেছিলো।
দিশাঃ তারাও ওই মানুষদের মতো,ওরাও গ্রাম থেকে মেয়েদের নিয়ে আসে চাকরি দিবে বলে কিন্তু আনার পর,
এমন একটা পেশায় যুক্ত করে দেয় যেটা থেকে চাইলেও বেড়িয়ে আসতে পারবে না আর সেটা হলো দেহ ব্যবসা।
.
সাঈদঃ হুম কিন্তু তোমার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যে তুমি আমার মেয়ের শরীর বশ করেছো। তা শুধু আমরাই জানি আর বাকি দুনিয়ার কাছে আমার মেয়ে তো খুনি বলে পরিচিত হবে আজ না হলে কাল তো কেউ না কেউ জানতেই পারবে এসব খুন দিশাই করেছে।।
দিশাঃ কীভাবে কেউ কী আমার মুখটা দেখেছে।
সাঈদঃ না দেখুক কিন্তু কেউ না কেউ তো একদিন দেখতেই পাবে।
দিশাঃ হুম ততদিন এ আমার প্রতিশোধ পুরনো হয়ে যাবে।
সাঈদঃ ওও আচ্ছা তোমার ওই ঘড়িটার সাথে সম্পর্ক টা কী।
দিশাঃ ওই ঘড়িটা হচ্ছে সেই ঘড়ি যার সামনে আমার মৃত্যু হয়েছিলো।
তার পর সেই ঘড়ির মাঝে আমার অাত্মাকে বন্দী করে রাখা হয়।
আজ আমি মুক্ত কারণ আপনার কারণেই আমি মুক্তি পেয়েছি।
আমার প্রতিশোধ পূরণ হতেই চলেছে, আর মাএ দুজন বাকি তাদের মারার পরে আমি আপনার মেয়ের শরীরকে ছেড়ে চলে যাবো অনেক দুর।
.
সাঈদঃ হুম কিছু দিন সময় দিলাম কিন্তু খেয়াল রেখো আমার মেয়ের যেনো কোনো সমস্যা না হয়।
নীলাশাঃ কথা দিলাম আপনার মেয়ের বিন্দু মাএ ক্ষতি হবে না।
সাঈদঃ কথা বলতে বলতে ভোরের আলো উঠে গেছে।
কিন্তু সেখানে আর দিশা ছিলো না চারি পাশটা ফাঁকা হয়ে গেলো।
সকাল বেলা পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
গাছের পাতায় হালকা শিশির বিন্দু জামা হয়েছে যা দেখতে খুব সুন্দর লাগছিলো।
আসলেই প্রকৃতিটা অনেক সুন্দর।
তাসফিয়াঃ চলো আমরা বাসায় ফিরে যাই আর তোমাকে তো আবার অফিসেও যেতে হবে তাই না।
.
সাঈদঃ হুম কিন্তু আজ আর বাসায় যাবো না।
তোমাকে নিয়ে অফিসে যাবো।
তাসফিয়াঃ কিন্তু এখান থেকে যাবো কিভাবে।
সাঈদঃ কিছুখন অপেক্ষা করতে হবে।
কেনো না একটু পর মানুষের চলাচল শুরু হয়ে যাবে কথা বলতে বলতে একজন মানুষ তেল নিয়ে কোথায় জানি যাচ্ছিলো।
সাঈদঃ এই যে একটু শোনেন।
লোকটিঃ জ্বী বলুন।
সাঈদঃ এখানে আশে পাশে কোনো তেল এর পাম্প আছে?
লোকটিঃ হুম ২ কিলোমিটার এ পেয়ে যাবেন।
সাঈদঃ ধন্যবাদ তবে আরেকটা কথা আমাকে কিছুটা তেল দেওয়া যাবে না মানে গাড়িতে তেল শেষ ১ লিটারের মতো তেল দিলে খুব উপকার হতো।
লোকটিঃ সমস্যা নেই।
তার পর গাড়িতে কিছুটা তেল ঢেলে দিলো।
সাঈদঃ এই নিন ১ হাজার টাকা।
লোকটিঃ থাক এর কোনো দরকার নেই।
সাঈদঃ নিন না আমি তো এটা খুশি হয়ে দিলাম। তার পর জোর করে টাকাটা দিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম।
.
কিছু দুর এসে পাম্প টি দেখতে পেলাম তার পর ৪০ লিটার তেল নিয়ে নিলাম।
এর পর হোটেলে নাস্তা করে অফিসে চলে আসলাম।
তাসফিয়াঃ তুমি একাই বসো এই রুমে।
সাঈদঃ হুম।
তাসফিয়াঃ ওয়াও এই রুমে তো টিভিও আছে।
সাঈদঃ হুম।
তাসফিয়াঃ আমি একটু টিভি দেখবো।
সাঈদঃ হুম দেখো।
.
তাসফিয়া টিভি অন করতেই।
আজ শহরের এসপি কামরুল কে মাঝ রাস্তায় খুন করা হয়েছে।
.
গল্পটা কাল্পনিক তবে বাস্তব লাইফেও এমন ঘটনা ঘটে যায় কারো কারো জীবনে।আর একটা কথা,বর্তমান যুগে মেয়েদের ক্ষতি মেয়েরাই বেশি করে। ঢাকা ভার্সিটির মেয়েটি ধর্ষণ হওয়ার পিছনে ও এক মেয়ের হাত আছে বলে প্রমান পাওয়া গেল।
নুসরাত কে ধর্ষণ করার পিছনেও কয়েক জন মেয়ে ছিল।
তাই সবাই উভয় পক্ষ থেকে সাবধান।
.
.#চলবে ------------------।
.
#লিখা_আবু_সাঈদ
.
.
#বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে সাথে থাকবেন। আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে মনে হয় গল্পটা আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা গল্পটা পড়েছেন,আর তাতে করে আমার ও পরবর্তী পর্বটা দেওয়ার আগ্রহ বেড়ে যায়।